একজন মানুষ মৃত্যুর পর আর কিছু নয়, দাফনের জন্য প্রয়োজন সাড়ে তিন হাত মাটি। সিলেটের বিয়ানীবাজারে বন্যার পানিতে বেশিরভাগ কবর তলিয়ে যাওয়ায় সেই জায়গাও এখন মিলছে না। যেখানেই কোদালের কোপ বসানো হচ্ছে সেখানেই গলগল করে উঠে আসছে পানি। এ অবস্থায় লাশ দাফন করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
বুধবার দিবাগত রাতে বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়নের খশির আব্দুল্লাহপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাহার উদ্দিনের (৪০) মৃত্যু হয় বন্যার পানিতে ডুবে। তাকে দাফনের জন্য মিলছিল না সাড়ে তিন হাত মাটি। এলাকার কবরস্থানে কোমর পানি।
পরে তাকে দুদাশাহ মাজার কবরস্থানে দাফন করতে গেলে বাধে বিপত্তি। যেখানেই কোদালের কোপ দেওয়া হচ্ছে সেখান থেকেই উঠে আসছে পানি। একই কবরস্থানে শুকনো জায়গায় কবর খুঁড়তে গেলে বেরিয়ে আসে আরো একটি কবর।
সারাদিন চেষ্টার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে দাফন করা হয় দুদাশাহ মাজার কবরস্থানে। দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এলকার স্বেচ্ছাসেবী আল জুনায়েদ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলার বৈরাগীবাজারের হযরত দুদাশাহ মাজারের কবরস্থানে গিয়ে দেখা যায়, কবরস্থানের আশে পাশে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ছে। তবে কিছু উঁচু স্থান থাকলেও সেগুলোতে পুরোনো কবর রয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেক কবরের নামফলক ছাড়া আর কিছু অনুমান করা যায় না।
বৈরাগীবাজার এলাকার বাসিন্দা মুছলিম উদ্দিন বলেন, বন্যার কারণে আশপাশ এলাকার প্রায় সকল কবরস্থানে পানি উঠে গেছে। আমরা নিহত বাহার উদ্দিনকে দাফনের জন্য সকাল থেকে সমস্যায় পড়েছিলাম। প্রথম পর্যায়ে কবর খননের লোক পাওয়া যায়নি।
পরে অনেক কষ্টে এক লোক পাওয়া গেলেও সে অনেক কষ্টে বুক সমান পানি পাড়ি দিয়ে এসেছে। তার সঙ্গে এলাকার যুবকরা কবর খুঁড়তে সাহয্য করলেও কবরের জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না।
কুড়ার বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তুতিউর রহমান তুতা বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় সকল কবরস্থানে বন্যার পানি উঠে গেছে। কেউ মারা গেলে এলাকাবসীর বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। তবে বৈরাগীবাজার এলাকার দুদাশাহ মাজারের কবরস্থানে কিছু জায়গায় এখনো পানি উঠেনি। আশপাশে পানি আছে পানি বাড়লে কি হবে জানি না। আপাতত কেউ মারা গেলে এখানে দাফন করা যাবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।